পাবনার ভাঙ্গুড়ায় রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করার অভিযোগে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর বাধার মুখে কাজ বন্ধ রেখে পালিয়েছেন নির্মাণ শ্রমিক। বৃহস্পতিবার (১২ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে ভাঙ্গুড়া উপজেলা গেট টু চর-ভাঙ্গুড়া ঘাট নির্মাণাধীন রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা নিম্নমানের খোয়া বহনকারী একটি ট্রাকও ভাঙচুর করে। এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা প্রকৌশলী অফিসার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সত্যতা পেয়ে ভালো মানের খোয়া দিয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
জানা গেছে, উপজেলা গেট টু চরভাঙ্গুড়া ১৩৬৫ মিটার রাস্তা ৮৫ লাখ টাকায় সংস্কারের কাজ পান আয়মন ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান । তবে আয়মন ট্রেডার্স কাজটি না করে বিক্রয় করে দেন সাব্বির হাসান ট্রেডার্স নামের অপর এক প্রতিষ্ঠানের কাছে । ১১৪ মিটার আর সি সি ১৮ ফিট চওড়া ও অবশিষ্ট দশ ফিট চওড়া বিশিষ্ট কার্পেটিং রাস্তা । সাব্বির হাসান ট্রেডার্স ওই কাজটি করছিলেন। রাস্তার এজিং, মাটির কাজ ও হাট বেডসহ কাজের মাত্র ১০% নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। তবে রাস্তার বেডে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে শুরু থেকেই। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা একাধিকবার টিকাদারী ওই প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষকে অবগত করলেও বিষয়টি তারা কর্ণপাত করছিলেন না। ঘটনার দিন তিন ট্রাক খোয়া নিয়ে কাজের সাইডে হাজির হলে এর কিছু অংশ নামানো হয়। এ সময় নিম্নমানের খোয়া দেখতে পাওয়ায় স্থানীয়রা তাদেরকে খোয়া নামাতে নিষেধ করেন। ফলে দুই ট্রাক নিম্নমানের খোয়া ফেরত নিয়ে যান। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতারা নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করার তীব্র প্রতিবাদ জানায়। কিন্তু জনতার কথায় গুরুত্ব না দিয়ে অপর ট্রাকের থাকা নিম্নমানের খোয়া তারা নামাতে থাকেন। ফলে বিক্ষুব্ধ জনতা সঙ্গবদ্ধ হয়ে ওই ট্রাকটি ভাঙচুর করে। এ সময় ড্রাইভার ও হেল্পার গাড়ি রেখে পালিয়ে যান । খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা প্রকৌশল অফিসার মোছা. আফরোজা পারভীন ও ওয়ার্ক এসিস্ট্যান্ট আব্দুল মালেক।
ঘটনার বিষয়ে আরজু নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করা শুরু থেকেই তাদেরকে নিষেধ করা হচ্ছিল। কিন্তু তারা নিষেধ অমান্য করে নিম্নমানের খোয়া রাস্তায় ব্যবহারের জন্য নিয়ে আসেন। জনতা বাধা দিলে দুই ট্রাক নিম্নমানের খোয়া তারা ফেরত নিয়ে যান।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সাব্বির হাসান ট্রেডার্স এর কর্তৃপক্ষ সজীব আহমেদ বলেন, জনতার বাধার কারণে দুই ট্রাক নিম্নমানের খোয়া ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। খোয়া সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের খোয়া দিয়েছে বলে তার অভিযোগ।
উপজেলা প্রকৌশল অফিসার মোছা.আফরোজা পারভীন বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কাজে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। নিম্নমানের খোয়া তুলে নিয়ে মানসম্মত খোয়া দেবার জন্য কঠোর নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. নাজমুন নাহার বলেন, সিডিউলে বর্ণিত কাজের গুণগত মান বুঝে নেয়া হবে। তবে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার অপরাধে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।