• December 23, 2024, 10:11 pm
শিরোনাম

চাটমোহরে শিশু কল্পনা হত্যার রহস্য উদঘাটন ও আসামী আটক

অনলাইন ডেস্ক 29 Time View
Update : শনিবার, ডিসেম্বর ২১, ২০২৪
চাটমোহরে শিশু কল্পনা হত্যার রহস্য উদঘাটন ও আসামী আটক

পাবনা ও চাটমোহর থানা পুলিশের অভিযানে চাঞ্চল্যকর চাটমোহর থানার চর-মথুরাপুর গ্রামের ০৯ বছরের শিশু কন্যা কল্পনা খাতুনকে নৃশংসভাবে হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন ও ০১ জন আসামী গ্রেফতার। চাটমোহর থানার মামলা নং- ০৫, তারিখ- ১৪/১২/২০২৪ ইং, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড।

পুলিশ জানান, চাটমোহর থানাধীন চর-মথুরাপুর গ্রামস্থ মোছাঃ তাছলিমা বেওয়া (৩৬), পিতা-মৃত তাজের খা, সাং-চর-মথুরাপুর বাঁধ, থানা-চাটমোহর, জেলা-পাবনা তার ০১টি ছেলে ও ০২টি মেয়ে সন্তান নিয়ে বসবাস করিতে ছিল। গত ০১ বছর পূর্বে তার স্বামী সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। তার বড় মেয়ের বয়স অনুমান ১৩ বছর, ছোট মেয়ের বয়স ০৯ বছর। ছোট মেয়ে ভিকটিম কল্পনা খাতুন (০৯) গুনাইগাছা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণীর ছাত্রী। গত ইং-১৩/১২/২০২৪ তারিখ বিকাল অনুমান ০৩.৩০ ঘটিকায় বাদীর বড় মেয়ে মোছাঃ আল্পনা খাতুন তার মেজ মেয়ে কল্পনা খাতুনকে চর-মথুরাপুর ব্রীজের উপর খেলিতে দেখিয়া তাকে দুপুরের খাবারের জন্য ডাকে। কিন্তু ভিকটিম কল্পনা খাতুন বাড়ীতে খাবার খেতে আসে না। কিছুক্ষন পরে ভিকটিমের মা ভিকটিম কল্পনা খাতুনকে পুনরায় খাবার খাওয়ার জন্য তাকে ব্রীজের উপর ডাকিতে গেলে সেখানে ভিকটিম কল্পনা খাতুনকে না পাইয়া পাশ্ববর্তী ভাঙ্গুড়া থানাধীন দহপাড়া খানকা শরিফে ইসলামী জালসা হওয়ায় সেখানে যাইতে পারে ভেবে ভিকটিমের মা সেখানে গিয়ে খোঁজাখুজি করিতে থাকে। ভিকটিমের মা তার নিকট আত্মীয় স্বজনসহ প্রতিবেশী লোকজনদের জানাইয়া পুনরায় দহপাড়া খানকা শরিফে ইসলামী জালসায় গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করিয়া না পাইয়া উক্ত জালসার মাইকের মাধ্যমে ভিকটিম কল্পনা খাতুনের হারানোর বিষয়টি মাইকিং করে। তারপরেও বাদীর মেয়েকে খুঁজিয়া পায় নাই। খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে গত ইং ১৪/১২/২০২৪ তারিখ সকাল অনুমান ১০.৩০ ঘটিকার সময় প্রতিবেশীর মাধ্যম সংবাদ পাইয়া চাটমোহর থানাধীন গুনাইগাছা ইউপিস্থ পৈলানপুর সাকিনে জনৈক মোহাম্মাদ আলী (৬৫) পিতা-মৃত দেরাজ ফকির এর লিচু বাগানের মধ্যে ভিকটিম কল্পনা খাতুন এর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে। পরবর্তীতে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে চাটমোহর থানার মামলা নং- ০৫ তাং- ১৪/১২/২০২৪ ইং, ধারা- ৩০২/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়।

মাননীয় পুলিশ সুপার জনাব মোরতোজা আলী খাঁন মহোদয়ের নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) জনাব কাজী শাহনেওয়াজ, পিপিএম-সেবা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) জনাব মোঃ রেজিনূর রহমান এবং সহকারী পুলিশ সুপার, চাটমোহর সার্কেল জনাব আরজুমা আকতার এর সার্বিক তত্বাবধানে, ওসি ডিবি এবং অফিসার ইনচার্জ চাটমোহর থানা, পাবনা এর নেতৃত্বে এসআই (নিঃ) বেনু রায়, মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই (নিঃ) মোঃ সামসুল ইসলাম সহ সঙ্গীয় অফিসার ফোর্স উক্ত হত্যা কান্ডের মূল রহস্য উদঘাটন এর জন্য কাজ শুরু করে। পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনায় জড়িত ১। মোঃ নুরুজ্জামান মল্লিক ওরফে নূর জামাল (১৭), পিতা- মোঃ আনিছুর রহমান মল্লিক, সাং- চর-মথুরাপুর, থানা- চাটমোহর, জেলা- পাবনাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত মোঃ নুরুজ্জামান মল্লিক ওরফে নুরজামাল (১৭) কে জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানায় যে, ভিকটিম কল্পনা খাতুন (০৯) তার প্রতিবেশী ভাতিজী হয়। তার বাড়ীর পার্শ্বেই অভিযুক্তের বাড়ী। গত ইং ১৩/১২/২০২৪ তারিখ রোজ শুক্রবার পাশ্ববর্তী ভাঙ্গুড়া থানাধীন দহপাড়া খানকা শরিফে ইসলামী জালসা ছিল। অভিযুক্ত মোঃ নুরুজ্জামান মল্লিক ওরফে নুরজামাল উক্ত জালসায় গিয়ে ঘোরা-ঘুরির এক পর্যায়ে একই তারিখ রাত্রি অনুমান ০৭.৩০ ঘটিকার সময় জালসার পার্শ্ববর্তী স্কুল মাঠে গিয়ে ৫০/- টাকার মাদকদ্রব্য গাঁজা ক্রয় করে সেবন করে। গাঁজা সেবন করার পরে অভিযুক্ত মোঃ নুরুজ্জামান মল্লিক ওরফে নুরজামাল এর শরীরে খারাপ অনুভুতি হওয়ায় সে স্কুল মাঠ থেকে বাড়ীতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। বাড়ী ফেরার পথে স্কুল মাঠের কোনায় নাগরদোলার পার্শ্বে ভিকটিম কল্পনা খাতুনকে বসে থাকতে দেখে ভিকটিমকে বাড়ী যাওয়ার কথা বলে। অভিযুক্ত মোঃ নুরুজ্জামান মল্লিক ওরফে নুরজামাল সেখান থেকে ভিকটিম কল্পনা খাতুনকে বাড়ীতে নিয়া যাওয়ার কথা বলে রওনা করে। কিন্তু অভিযুক্ত মোঃ নুরুজ্জামান মল্লিক ওরফে নুরজামাল বাড়ীর রাস্তায় না গিয়ে তার বিকৃত যৌন কামনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে ভিকটিমকে পায়ে হাটিয়ে চাটমোহর থানাধীন গুনাইগাছা ইউপিস্থ পৈলানপুর সাকিনে চাকলার দিয়ার বিলের মধ্যে জনৈক মোহাম্মাদ আলী (৬৫) পিতা-মৃত দেরাজ ফকির এর লিচু বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পরে ভিকটিম কল্পনা খাতুন অভিযুক্ত মোঃ নুরুজ্জামান মল্লিক ওরফে নুরজামালকে বলে আমাকে বাড়ীতে না নিয়ে এখানে নিয়ে আসছো কেনো। তাড়াতাড়ি আমাকে বাড়ীতে নিয়ে চলো বলে ভিকটিম কল্পনা খাতুন কান্নাকাটি শুরু করে। অভিযুক্ত মোঃ নুরুজ্জামান মল্লিক ওরফে নুরজামাল ভিকটিমের কান্নাকাটির কারনে লোকজন জেনে যাবে এমন ভয়ে ভিকটিম কল্পনা খাতুন এর গলা চেপে ধরে। কিছুক্ষণ গলা চেপে ধরে থাকার কারনে ভিকটিম কল্পনা খাতুন শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে। অভিযুক্ত মোঃ নুরুজ্জামান মল্লিক ওরফে নুরজামাল ভিকটিম কল্পনা খাতুন এর মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য তার পড়নের পায়জামা খুলে ভিকটিমের গলায় ফাঁস লাগাইয়া মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘটনাস্থল হতে পুনরায় দহগ্রাম খানকা শরীফের জালসায় চলে যায়। জালসা হতে রাত্রি অনুমান ১১.৩০ ঘটিকার সময় বাড়ীতে যাওয়ার সময় ভিকটিম এর মা তাছলিমা খাতুন এর সহিত দেখা হয়। তখন ভিকটিম এর মা তাছলিমা খাতুন ভিকটিম কল্পনা খাতুন এর নিখোঁজ এর বিষয়টি জানালে অভিযুক্ত মোঃ নুরুজ্জামান মল্লিক ওরফে নুরজামাল বলে তার সাথে আজকে ভিকটিম কল্পনা খাতুনের কোথাও দেখা হয় নাই। পরে অভিযুক্ত মোঃ নুরুজ্জামান মল্লিক ওরফে নুরজামাল ভিকটিমের মা তাছলিমা খাতুনের সহিত ভিকটিমকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করে না পেয়ে রাত্রী ১২.৩০ ঘটিকার সময় তার বাড়ীতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।

অভিযুক্তের নাম ও ঠিকানাঃ মোঃ নুরুজ্জামান মল্লিক ওরফে (১৭), পিতা- মোঃ আনিছুর রহমান মল্লিক, সাং- চর-মথুরাপুর, থানা- চাটমোহর, জেলা- পাবনা।

Share


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

পদ্ম
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com