ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে চলা ১৩ মাসের যুদ্ধে গাজা উপত্যকায় নিহতের সংখ্যা ৪৪ হাজার ছাড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা নিহত বেসামরিক এবং হামাস যোদ্ধাদের তালিকা পৃথকভাবে করেন না। তবে তারা বলেছে, নিহতদের অর্ধেকেরও বেশি নারী ও শিশু। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা ১৭ হাজারের বেশি জঙ্গিকে হত্যা করেছে। তবে এর স্বপক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ নেই ।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ৪৪,০৫৬ জন নিহত এবং ১০৪,২৬৮ জন আহত হয়েছেন। প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি। কারণ, ধ্বংসস্তূপের নিচে বা চিকিৎসকরা যেতে পারেননি এমন জায়গায় হাজার হাজার মৃতদেহ চাপা পড়েছে।
মূলত হামাস যোদ্ধারাই এ যুদ্ধ শুরু করে। তারা গত বছরের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা চালায়। তখন প্রায় ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে। যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক ছিলেন। এর চেয়ে জঘন্য কাজটি ছিল ২৫০ জন নিরপরাধ মানুষকে অপহরণ করে গাজায় নিয়ে আসা। প্রায় ১০০ জিম্মি এখনও গাজার ভিতরে রয়েছেন। তাদের মধ্যে কতজন বেঁচে আছেন তা নিশ্চিত নয়।
তবে আশার আলো দেখাচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট এবং হামাস নেতা মোহাম্মদ দেইফের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালতের বিচারকরা। তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আদালতের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত মে মাসে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করে আপিল করে ইসরায়েল। এতে ওই সময় আদেশটি স্থগিত হয়ে যায়। দীর্ঘ শুনানি শেষে একটি প্রাক-বিচারক চেম্বার আদালত নিজস্ব এখতিয়ারে ইসরায়েলের চ্যালেঞ্জ প্রত্যাখ্যান করে। এরপর নেতানিয়াহু, ইয়োভ গ্যালান্ট ও দেইফকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজিরের নির্দেশ জারি করা হয়।
মোহাম্মদ দেইফের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করা হলেও তার জীবিত থাকা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, জুলাই মাসে গাজায় একটি বিমান হামলায় তিনি নিহত হয়েছেন। তবে তার নিহতের দালিলিক প্রমাণ আদালতে নেই। তাই আদালতের চোখে দেইফ এখনও জীবিত এবং যুদ্ধাপরাধের আসামি।
পরোয়ানা জারির আদেশে বিচারকরা বলেছেন, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধের সময় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। এই তিন ব্যক্তির ওই অপরাধের দায় বহন করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে।