পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ৫ দোকান-বাড়িতে ডাকাতি: ৪০ ভরি সোনা,২০ লক্ষ টাকা লুট
অক্টোবরে একীভূত হচ্ছে এনসিপি ও গণঅধিকার !

অনলাইন ডেস্কঃ
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে একীভূত হওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও গণঅধিকার পরিষদ। এ নিয়ে গত শুক্রবার উভয় দলের শীর্ষ নেতারা বৈঠক করেছেন। একদলে রূপান্তর হওয়ার বিষয়টিকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছেন উভয় দলের নীতিনির্ধারকরা। গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর ও সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খানের অবস্থান কী হবে- এটা ঠিক হলেই একীভূতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। আগামী মাসে (অক্টোবর) আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে বলে জানিয়েছেন উভয় দলের নেতারা।
গণঅধিকারের এক নেতা বলেন, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে গণঅধিকার পরিষদেই একীভূত হওয়া উচিত এনসিপির। অন্যদিকে এনসিপির নেতারা বলেছেন, জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে গড়ে ওঠা এনসিপি সারাদেশে বিস্তৃত। দ্রুত দলটি ইসির নিবন্ধন পেয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে গণঅধিকার পরিষদ এনসিপিতে একীভূত হলে রাজনীতিতে ভালো ফল আসবে। উভয় দলের নেতাদের আশা, যেভাবে আলোচনা চলছে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
গত শুক্রবার বৈঠকে বসার আগে গণঅধিকার ও এনসিপির শীর্ষ নেতারা নিজ নিজ দলীয় ফোরামে আলোচনা করে একীভূতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। এনসিপির সূত্র জানায়, নুরুল হক নূর গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি এবং ডাকসুর সাবেক ভিপি।
আবার রাশেদও দলটির গুরুত্বপূর্ণ নেতা। এই অবস্থায় তাঁদের সম্মান ঠিক রেখে কীভাবে এগোনো যায়, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। এখন পর্যন্ত নূরের জন্য নতুন পদ সৃষ্টির পক্ষে এনসিপি। পদটি যেন আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের পরের অবস্থানেই থাকে। তবে, রাশেদ খানসহ অন্যদের অবস্থান কী হবে, তা নিয়ে এখনও আলোচনা হয়নি।
মো. রাশেদ খান আমাদের সময়কে বলেন, গণঅধিকার পরিষদ ও জাতীয় নাগরিক পার্টি একীভূত হওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। যেহেতু দুটি দলই রাজপথের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠেছে। দুই দলের যারা নেতৃত্বে আছেন, অতীতের আন্দোলন সংগ্রামেও একসঙ্গে কাজ করার ইতিহাস আছে। আমাদের চিন্তা চেতনায় যেহেতু মিল রয়েছে; জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী এক হয়ে কাজ করতে পারলে ভালো কিছু হবে। এই আলোচনা চলমান আছে। দুই দল এক হলে একটা নাম হতে পারে। হয়তো নতুন নামও আসতে পারে। নেতৃত্বে কে থাকবেন- তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। জনগণের কাছে যিনি গ্রহণযোগ্য, তিনিই নেতৃত্বে থাকবেন। সবকিছু আলোচনার পর্যায়ে আছে। আলোচনা ইতিবাচক এটুকু বলতে পারি।
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব গণমাধ্যমকে বলেন, গণঅধিকার পরিষদ ও এনসিপির বেশিরভাগ নেতাকর্মীই তরুণ। কোটা সংস্কার থেকে শুরু করে বিগত জুলাই আন্দোলনে একসঙ্গে রাজপথে ছিলেন। সে হিসেবে দুই দলের কাজের মিল রয়েছে। দলের উচ্চপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এক হলে তারুণ্যের একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি হবে। জনগণও এমনটি দেখতে চায়।
অন্যদিকে এর বাইরেও কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা চলছে উল্লেখ করে এসসিপি সূত্র জানায়, কোনো দল যদি একীভূত বা জোটভুক্ত হতে চায়, তাদের ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁরা।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ২০১৮ সালে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। এরপর ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে জয়ী হন এ আন্দোলনের আহ্বায়ক নুরুল হক নূর। পরে ২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর রাজধানীর পুরানা পল্টনের একটি মিলনায়তনে ‘গণঅধিকার পরিষদ’ নামে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর ২০২৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন লাভ করে দলটি।
এদিকে ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গঠিত হয় চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি। দলটির আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন। এর মধ্যে আখতার ২০১৯ সালে ডাকসুতে নুরুল হক নূরের প্যানেল থেকে সমাজসেবা সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। দুজনই গণঅধিকার পরিষদের ছাত্র সংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
এনসিপি গঠনের আগে তাঁদের অরাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম ছিল জাতীয় নাগরিক কমিটি। এতে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আহ্বায়ক ও আখতার হোসেন সদস্য সচিব ছিলেন। নির্বাচন কমিশনে দলটির নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।
সূত্রঃ আমাদের সময়