Breaking News :

বর্জন, বিশৃঙ্খলা-অনিয়মসহ যত অভিযোগ

অনলা্ইন ডেস্কঃ

পাল্টাপাল্টি অভিযোগের মধ্য দিয়ে শেষ হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। এখন চলছে ভোট গণনা। প্রায় ৩৩ বছর পর হওয়া এ নির্বাচনে বড় ধরনের কেনো সংঘাত না হলেও ভোট বর্জন, বিশৃঙ্খলা ও অনিয়মের অভিযোগ ওঠে বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীদের পক্ষ থেকে।

ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার পর সকাল থেকেই বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা নানা অসংগতি ও অনিয়মের কথা জানান। শুরুতে ভোট কারচুপির সরাসরি অভিযোগ কারও ছিল না। তবে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার দেড় ঘণ্টা আগে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী তানজিলা হোসেন বৈশাখী।

এর পর জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা জানায় ছাত্র ইউনিয়ন (একাংশ) সমর্থিত ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেল। বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মুরাদ চত্বরে সংবাদ সম্মেলন করে তারা এই অনাস্থার কথা জানান। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী শরণ এহসান।

পরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নির্বাচনে প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক ভূমিকা ও ছাত্রশিবিরকে ভোট জালিয়াতিতে সহযোগিতার অভিযোগ তুলে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয় ‘সংশপ্তক পর্ষদ’ প্যানেল।

এছাড়া জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল সংসদ নির্বাচনে ব্যালট পেপারে ছিল ভুল। ভোটাররা বলেছেন, কার্যকরী সদস্য পদে তিনজন প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার কথা থাকলেও ব্যালটে দেওয়া নির্দেশনায় একজনের নামের পাশে টিক চিহ্ন দিতে বলা হয়েছে। পরে সে ব্যালট সংশোধন করা হয়।

নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ আসার পর জটিলতা তৈরি হলে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা হল কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ প্রায় সোয়া ঘণ্টা বন্ধ ছিল।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দুপুরে ছাত্রদলের জিএস প্রার্থী তানজিলা হোসেন বৈশাখী হল পরিদর্শনে আসেন। কিন্তু তিনি হলে ঢুকতে পারেননি। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করেন ছাত্রদলের ভিপি পদপ্রার্থী শেখ সাদি হাসান। তারপরই জটিলতার সৃষ্টি হয়।

একই কারণে শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ হলে ভোটগ্রহণ আধা ঘণ্টা বন্ধ ছিল।

নারী ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি নারী সাংবাদিকরাও সেসব কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা পেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ ছাড়া সকাল থেকে ভোটের চেয়ে ব্যালট বেশি যাওয়া, প্রতিপক্ষের আচরণবিধি ভঙ্গ করা, জামায়াত সংশ্লিষ্ট কোম্পানি থেকে ব্যালট পেপার ও ওএমআর মেশিন সরবরাহ করা, পোলিং এজেন্টের অনুমতি থাকলেও তাদের প্রবেশে বাধা দেওয়া, ডোপটেস্টের ফলাফল না আসা, নির্বাচনকে ‘ম্যানিপুলেট’ করার নানা অভিযোগ আসে।

এর মধ্যে দুপুরের দিকে ছাত্রদলের প্যানেলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, জামায়াত সংশ্লিষ্ট কোম্পানি থেকে ব্যালট পেপার ও ওএমআর মেশিন সরবরাহ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ‘নীলনকশার মাধ্যমে ছাত্রশিবির জয়ী হতে পরিকল্পনা’ করছে বলে তারা মনে করছেন।

পরে তাদের এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন ব্যালট পেপার মেশিনের পরিবর্তে হাতে গোনার সিদ্ধান্ত নেয়।

এ ছাড়া প্রশাসনের বিরুদ্ধে অসংগতি, গাফিলতি, স্বজনপ্রীতি ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে। অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তুলে ভোটে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের তিন শিক্ষক।

উল্লেখ্য, জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ হাজার ৭৪৩ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ভোটার ৫ হাজার ৭২৮ জন, ছাত্র ভোটার ৬ হাজার ১৫ জন। ২৫টি পদে লড়ছেন ১৭৭ জন প্রার্থী।

এরমধ্যে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৯ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৯ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে ৬ জন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ১০ জন।

Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com