পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ৫ দোকান-বাড়িতে ডাকাতি: ৪০ ভরি সোনা,২০ লক্ষ টাকা লুট
দুই-একটা দল পণ করেছে, পিআর না হলে নির্বাচনে যাব না: মির্জা ফখরুল

অনলাইন ডেস্কঃ
পিআর না হলে নির্বাচনে যাবে না, দুই-একটি দল এমন পণ করে বসে আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি শফিউল বারী বাবুর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আজ খবরের কাগজে দেখলাম ১২টা মৌলিক বিষয় পরিবর্তনে সবগুলো দল এক হয়েছে। এটা একটা ইতিবাচক বিষয় এবং আমি ধন্যবাদ জানাই ড. আলী রীয়াজকে যে, তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে তার টিমকে নিয়ে অন্তত এ জায়গায়টায় আসার চেষ্টা করেছেন।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের অনেকে খোটা দিয়ে কথা বলে যে, আমরা সংস্কার চাই না। সংস্কারের চিন্তাটাই তো আমাদের, সংস্কারের শুরু আমাদের দিয়ে। ১৯৭৫ সালের আগে শেখ মুজিবুর রহমান যিনি ফ্যাসিজমের মূলহোতা, তিনি গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে একদলীয় শাসন বাকশাল করে দিয়েছিলেন। সেই বাকশাল থেকে ফিরিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র নিয়ে এসে মাল্টি পার্টি সিস্টেমের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাটা চালু করলেন আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। তিনি মুক্ত করলেন সমস্ত অন্ধকারকে।’
তিনি বলেন, ‘এই বহুদলীয় গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ইত্যাদি সংস্কার শুরু করলেন জিয়াউর রহমান। এগুলো ছিল তার রাজনৈতিক সংস্কার। আর অর্থনৈতিক সংস্কার করলেন, তথাকথিত ভ্রান্ত অর্থনৈতিক ধারণা থেকে তিনি নিয়ে আসলেন মুক্তবাজার অর্থনীতির ধারণায় এবং সেটা করে তিন-সাড়ে তিন বছরের মধ্যে বাংলাদেশের চেহারা বদলে গেল।’
দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আমলে সংস্কারের পদক্ষেপ তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া প্রেসিডেন্সিয়াল ফর্ম অব গভর্মেন্টকে পার্লামেন্টারি ফর্ম অব গভর্মেন্টে নিয়ে গেলেন। এখানে যারা বসে আছেন তারা দেশনেত্রীর সঙ্গে লড়াই করেছেন রাস্তায়, জেল খেটেছেন একইভাবে স্বৈরাচারকে দূর করার জন্য। তিনি কেয়ারটেকার সরকারকে মানেননি প্রথমে, পরে যখন উনি দেখলেন এটা মানলে দেশের মানুষের উপকার হবে, গণতন্ত্র শক্তিশালী পথ পাবে, ভিত্তি পাবে তিনি সেটা মেনে নিয়ে কেয়ারটেকার গভার্মেন্টকে সংবিধানে সন্নিবেশিত করলেন সংসদের মাধ্যমে।’
তিনি বলেন, ‘ওই সরকারের (তত্ত্বাবধায়ক সরকার) অধীনে তিনটি নির্বাচন হয়েছে, যে নির্বাচনগুলো নিয়ে কোনো প্রশ্ন ওঠেনি, মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছে। নারীদের ক্ষমতায়ন, শিশুদের বেড়ে ওঠার ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে জনমুখী করা, এই সবই কিন্তু সংস্কারের মধ্য আমাদের নেতা শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দিয়ে শুরু।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সুতরাং সংস্কার তো আমাদের, এই দলের বিএনপির। সংস্কারকে আমরা ভয় পাই না, আমরা সংস্কারকে স্বাগত জানাই। সমস্যাটা ওই জায়গায় হয়, যখন দেখি যে, নতুন নতুন চিন্তা আসছে। সেই চিন্তার সাথে আমাদের দেশ-জাতি পরিচিত নয়।’
তিনি বলেন, ‘এই যে পিআর, বা আনুপাতিক হারে প্রতিনিধি নির্বাচন নিম্নকক্ষে…এটা আমাদের দেশের মানুষ বোঝেই না। মানুষ বলে পিআর কী জিনিস? যারা এখনো ইভিএমে ভোট দেওয়া বোঝে না…তারা পিআর বুঝবে কী করে? এই চিন্তাভাবনা থেকে দূরে যেতে হবে। দুঃখজনক হলো যে, এটাকে আমাদের দেশের দুই-একটা রাজনৈতিক দল প্রোমোট (প্রচার) করে। প্রোমোট না, পণ করে বসে আছে যে, এটা না হলে নির্বাচনে যাব না।’
অন্তবর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এদেশের মানুষ যেটাতে অভ্যস্ত সেই ভোটের ব্যবস্থা করেন, তার প্রতিনিধিত্বে ব্যবস্থা করেন, জনগণের প্রতিনিধি থাকে সেই পার্লামেন্ট নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন তাহলেই সমস্যাগুলো সমাধান হবে, না হলে হবে না।’
তিনি বলেন, ‘বাইরে থেকে এসে নতুন নতুন চিন্তাভাবনা দিয়ে দেশের সমস্যার সমাধান করা যাবে না। আমরা খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, অবিলম্বে সংস্কারগুলো শেষ করুন, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আর দয়া করে নির্বাচনের যে তারিখটা নির্ধারণ করেছেন আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনে বৈঠকে বসে যেটাতে জাতি অনুপ্রাণিত হয়েছে, আশান্বিত হয়েছে সেই সময়টাতে নির্বাচন দিন, মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিন।’