শফিউল আযম, বেড়া: সুতিখালি নদীতে পানি নেই, মাছ নেই, চাষ হচ্ছে ধান। মজে যাওয়া এ নদীতে পানির ¯্রােতধারা এখন শুন্যের কোঠায়। পাবনা জেলার এক সময়ের মৎস্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত খর¯্রােতা সুতিখালি নদী এখন মৃত। নদীর বিস্তীর্ণ বুক জুড়ে বেশিরভাগ অংশেই ধানসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ করা হচ্ছে। নেই দু’কুল ভাঙা উত্তাল ¯্রােতের রাশি। তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে এ নদী। দখল-দূষণে নদী ক্রমেই সংকুচিত হয়ে পড়েছে। ফলে দেশি মাছের অন্যতম এ প্রাকৃতিক উৎস ক্রমেই বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
সাঁথিয়া উপজেলা মৎস অফিস ও বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া তথ্য মতে, সাঁথিয়া-বেড়া উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে চলা সূতিখালি নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ৯০ কিলোমিটার। এক সময় নদীর দু’পাড়ের চাষিরা নদী থেকে জমিতে সেচ দিয়ে ফসল ফলাতো। নদী শুকিয়ে যাওয়ায় শ্যালোইঞ্জিন বসিয়ে সেচকাজে ভূর্গভের পানি ব্যবহার করা হচ্ছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। এতে ফসল উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেছে। বর্তমানে সুতিখালী নদীর আংশিক পাবনা সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের পানি নিস্কাশন খাল হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। পানির অভাবে বিপন্ন সুতিখালি নদী বর্ষাকাল ছাড়া বাকি মওসুমে থাকে পানিশুন্য। এতে জীববৈচিত্র্য, মৎস্য, কৃষি অর্থনীতি, নৌ-যোগাযোগ ও পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার সোনাতলা গ্রামে কাছে ইছামতি নদী থেকে উৎপত্তি সুতিখালি নদী দু’টি ধারায় বিভক্ত হয়ে একটি ধারা পশ্চিম দিকে ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে চলনবিলের সাথে মিলিত হয়েছে। অপর ধারাটি পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে বেড়ার উপজেলার অধিননগরে হুড়াসাগর নদের সাথে মিলিত হয়েছে।
এদিকে ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া ও চাটমোহর অংশের সুতিখালি নদী প মজেযাওয়ায় পুরোটাই দখল হয়ে গেছে। সাঁথিয়া ও বেড়া অংশ দখল-দূষণে মৃতপ্রায়। এই নদী সুস্বাদু দেশি মাছের অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত ছিল। এখানে পুটি, চাপিলা, বাইন, মাগুর, টেংরা, কৈ, টাটকিনি, শোল, গজার, পাবদাসহ প্রায় সবরকম দেশি মাছ পাওয়া যেত। এ নদীর মাছ অত্যন্ত সুস্বাদু। এক সময় বাজারে সুতিখালি নদীর মাছের ব্যাপক চাহিদা ছিল। কিন্তু দখল-দূষণে নদীর আয়তন কমে আসায় ও শুকিয়ে যাওয়ায় মাছশুন্য হয়ে পড়েছে। তাছাড়া বর্ষা মওসুমে কারেন্ট জালে অবাধে মা মাছ ও পোনা মাছ শিকার করায় মাছে বংশ বিস্তার মারাত্বকভাবে ব্যাহত হয়। বেড়া নাজিম বাজারে ৩৫ বছর ধরে মাছ বিক্রি করছেন সুকান্ত হালদার। তিনি বলেন, এখন অনেক জেলে অপরিচিতদের কাছে সুতিখালির নামেই মাছ বিক্রি করছে। কারণ সুতিখালি নদীর কথা বললে মাছ তারাতারি বিক্রি হয়ে যায়।
বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, সুতিখালি নদী আংশিক এখন পাবনা সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের পানি নিস্কাশন খাল হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। দখল-দূষণসহ নানা কারণে এ নদী এখন সংকুচিত, ভরাট ও পানিশুন্য হয়ে পড়েছে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ মোঃ বদরুল আলম -০১৭১২৯৫৭০৬৬,
নির্বাহী সম্পাদকঃ সফিক ইসলাম,-০১৭১৬৪৯২৪১৫,
বার্তা সম্পাদকঃ আব্দুর রহিম-০১৭১৫৮৪৪১৬২
Copyright © 2024 Protidinerjonopod