খালেদা জিয়ার জন্য জার্মানি থেকে ভাড়া করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠাচ্ছে কাতার
ভাঙ্গুড়ায় অন্যের পুকুরের মাছ ভোর রাতে তুলে বিক্রি করে দিলেন বিএনপি নেতা ও তার ভাই

অন্যের পুকুরের মাছ ভোর রাতে তুলে বিক্রি করে দিলেন পাবনার ভাঙ্গুড়ার বিএনপি নেতা শহীদুল ইসলাম ও তার ভাই আব্দুর রশীদ। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মো. ইয়াহিয়া ও তার পরিবারের প্রায় পথে বসার উপক্রম হয়েছে। শহিদুল ইসলাম উপজেলার প্রত্যন্ত ইউনিয়ন নামে খ্যাত খানমরিচ ইউনিয়নের সাবেক বিএনপি-র সভাপতি । তাদের দাবি, ১৭ বিঘার ওই পুকুরটিতে অন্তত ১০০ মন মাছ ছিল; যার অধিকাংশই তুলে বিক্রি করে দিয়েছেন দুই ভাই।
পাবনার মুন্ডা আদিবাসী পরিবারকে উচ্ছেদে হুমকি এবং স্থানীয়দের জমি হাতিয়ে নেওয়াসহ নানা অভিযোগে রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে ভাঙ্গুড়া থানা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানাধীন সেনা ক্যাম্প বরাবর অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার।
অভিযোগে বলা হয়, ১৭ বিঘার পুকুরটির অধিকাংশ মালিকানা (প্রায় ১০ বিঘা) প্রয়াত মো. আজগার আলীর ২ সন্তান ও মেয়েদের। বাকি ৭ বিঘার মধ্যে সাড়ে ৪ বিঘা স্থানীয় গ্রামবাসীর এবং সোয়া ২ বিঘার দুই মালিক আব্দুর রশীদ ও তার ভাই। এই দুই বিঘার ক্ষমতাবলেই পুকুর কাটার দেড় বছরের মাথায় দখলে নিয়ে নেন রশীদ ও তার ভাই শহীদুল ইসলাম।ভুক্তভোগীর অভিযোগ, পুকুরটির দখল নিতে এর আগে গত ৩ আগস্ট পাবনা-৩ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য মকবুল হোসেনের ছেলে ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম হাসনায়েন রাসেলের বাসায় গোপন বৈঠক করেন রশীদ। ওই বাড়িতে মাছও নিয়ে যান রশীদ। কিন্তু চুক্তির দু’দিন পর ছাত্র জনতা গণঅভ্যুত্থান সরকার পতন হাওয়ায় পরিকল্পনা আর এগোয় নি।ঘটনায় ভুক্তভোগী ইয়াহিয়া বলেন, আমি গত ৩ দফায় ধার-ধেনা করে এই পুকুর সাজিয়েছি। কিন্তু প্রতিবারই রশীদ এটি ভেঙে গ্রাস করে নিয়েছেন। আমি এর এমন কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, যেন ভবিষ্যতে সে কোনদিন অন্যের জমি-পুকুর নিয়ে ছিনিমিনি খেলার সাহস না পায়।
ইয়াহিয়া আরও বলেন, পুকুর কাটার ২ বছরের মাথায় গ্রাম্য নেতাদের মাধ্যমে চাপ দিয়ে আমাকে এখান থেকে বের করে দেওয়া হয়। সে সময় লিজ বাবদ প্রতিবছর টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও গত ১৪ বছরে এক টাকায় দেয়নি রশীদ। শুধু লিজের এই টাকা (প্রচলিত নিয়মে ২০ হাজার) ধরলেও পুরো এই সময়ে রশীদের কাছ থেকে তার পাওনা ১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। সুতরাং আমি অবৈধ উপায়ে আজকের মাছ ধরা এবং গত ১৪ বছরের ক্ষতিপূরণ চাই।
অভিযোগের বিষয়ে আব্দুর রশীদ সময়ের আলোকে বলেন, আমরাই এই জমির মালিক। কিন্তু আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সর্ম্পূণ মিথ্যা। তারাই আমাদেরকে হয়রানি করছে। পুকুরটি আমরাই খনন করেছি এবং এক সময় আমার অধীনে ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ আমলে উল্টো আমাদেরকেই নানা ভাবে হয়রানি করা হচ্ছে এখন আমরা নির্যাতনে শিকার হচ্ছি।
মো. শহীদুল ইসলাম সময়ের আলোকে বলেন, এই সম্পত্তি আমাদের। যদি কোন সন্দেহ থাকে তাহলে আপনারা (সাংবাদিকরা) কাগজপত্র ও তদন্ত করে দেখতে পারেন। তাদের হয়তো কিছু জমি থাকতে পারে। তিনি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি পদে থাকা শহীদুল ইসলাম আরও বলেন, উভয়পক্ষ বসে জমির কাগজপত্র দেখে মীমাংসা করা যেতে পারে। যদি তারা পায় তাহলে নিয়ে যাবে। এখানে দখলের অভিযোগ ঠিক না।
এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. নাজমুন নাহার জানান, অভিযোগটি পেয়েছি। কিন্তু বিষয়টি পুরো না জেনে মন্তব্য করতে পারছি না। উভয়পক্ষকে ডেকে বিষয়টি সুরাহা করা হবে জানান তিনি।